রাঢ়েক_বেইরসা
অনুবাদ - মূলচাঁদ মাহাত কাছুআর
(মূল কবিতা : রাঢ়ে বর্ষা- লেখা: শ্যামল মণ্ডল)
আউ চলি আউ বেইরসা রানি চাসিকে ভরসা দেই
রেঁগিআ ভুঁইএ রুগড়ি মাটিঞ রিঝে হেরাউতা খেই।
রাঢ় ভুঞেক খিজল জমি রহলেক অনাবাদি
বাদেইরেকর বেইরসা নাভি চাসিরা উঠত মাতি।
বাদেইর ফাটা বেইরসা হেলে চাস করতা চাসি
সুখল মাটি ভিঁজলে হেতেইক আমন ধানেক খেতি।
চাসিরা তখন বিহিন গাড়হিঞ আফড় বাঁধতা আঁটি
হারেক ফারে আঁতর চিরি সামরান হেতেইক মাটি।
খেতে গঠে চাসিক গুইলে আসাড় সরাবন মাসে
বাগালেকর চরাট টাঁইড় ভরতেইক নাউআ ঘাঁসে।
আউএঁ নঅ সরাবন ঝেইড় বেইহারেক অনাবদি
উঠিন দেখেঁ চাসাক বেটিঞ রহলাহি খঁইছা ছাঁদি।
ফুলে গাঁথল বেনি বাঁধিকে গাউএক বেটি ছউআ
ভাদর মাসে করম গিতে উঠাই আনতা জাউআ।
অঘন মাসে নাউআ খাউআ মাস পিঠাক বাস,
মাটিক ঘারেউ হুবে রহতা জদি হেতেইন চাস।
আউ নঅ আউ বাদেইর বেরা চাসিরাক হউক চাস
ঢল নাগরাঞ রিঝে রঁগে পরব করতা বারমাস।
বি.দ্র.- পাঠকের সুবিধার্থে মূল কবিতাটিও দেওয়া হলো ৷
রাঢ়ে বর্ষা
শ্যামল মণ্ডল
আয় চলে আয় বর্ষা রাণী
চাষিদের ভরসা দিয়ে,
লাল কাঁকুরে লাল মাটিতে
যা-না'রে বর্ষা দিয়ে ।
রাঢ়ের ঐ ঊষর জমি
খালি সব থাকলো পরে,
আকাশের বৃষ্টি নেমে
হাসি হোক চাষির ঘরে।
মেঘ ভেঙে বর্ষা এলে
ক্ষেতে চলে চাষির দলে,
শুষ্ক মাটি সরস হলে
সে মাটিতে আমন ফলে।
চাষিরা বীজতলাতে
ধানের চারা বাঁধে আঁটি,
লাঙ্গলের ফলায় ফলায়
চাষের যোগ্য হবে মাটি।
মাঠে চাষি কলরবে
বর্ষার শ্রাবন মাসে,
রাখালের চারণভূমি
ভরে যায় নতুন ঘাসে।
আয়রে আয় শ্রাবন ধারা
তরাইয়ের ঢালু ক্ষেতে,
সেখানে চাষির মেয়ে
রয়েছে আঁচল পেতে।
ফুলে গাঁথা বেনী বাঁধা
সারি সারি গাঁয়ের মেয়ে,
গুনগুনিয়ে গানের কলি
আসিবে পাহাড় বেয়ে।
অঘ্রাণের নবান্নেতে
পীঠে-পুলি পায়েস ক্ষীরে,
মাটির ঐ ঘরে ঘরে
সুখের কদিন আসবে ফিরে।
আয়রে আয় বাদল বেলা
শুরু হোক চাষির খেলা,
গাঁয়ে গাঁয়ে মাদল বাজুক
আগামীর পরব মেলা ।